মেয়েদের পোশাক নিয়ে মোশারফ করিমের ‘ইসলাম বিরোধী’ মন্তব্যে অনলাইন অফলাইন তোলপাড়। তিনি ধর্ষণের কারণ হিসেবে পোশাক নয় বরং বিকৃত মস্তিষ্ককে দায়ী করেছিলেন। এটা কিনা হয়ে গেল ইসলাম বিরোধী মন্তব্য? তাহলে কি ইসলাম ‘অশালীন’ পোশাক পরা মেয়েদের ধর্ষণের অনুমতি দেয়? এটা জিজ্ঞেস করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ৭দিনের ব্যান খেলাম সাথে বেশ্যা-মাগী জাতীয় উপাধি সহ ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি।
কোরআন ধর্ষণের অনুমতি দেয়- এটা মেনে নিতে তাদের আপত্তি। আবার ধর্ষণের জন্য দায়ী শুধুই ধর্ষক এটাও তারা মেনে নিতে পারছেন না। কারণ তাদের অনেকেই সুযোগের অভাবে এখনও ধর্ষক হয়ে উঠতে পারেননি। তাদের চিন্তাধারা কতটা নোংরা তা তারা জানেন। তাদের এই নোংরামি ইসলাম সম্মত কিনা প্রশ্ন তুলতেই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত! আমাকে ধর্ষণ করে তারা দেখিয়ে দিতে চায়, আমি মিথ্যা বলছি, কোরআনে আসলে অনেক “ভালো ভালো” কথা লেখা আছে। কোরআনে যদি এত ভাল কথা লেখা থাকে তাহলে কোরআন মেনে চলা ব্যক্তিরা এত জঘন্য রকম নোংরা কেন?
কী বলেছিলেন মোশারফ করিম? খুবই সাদামাটা দুটো কথা। “একটা মেয়ে তার পছন্দ মত পোশাক পরবে না? পোশাকেই যদি সমস্যা তাহলে ৭ বছরের মেয়েটির ক্ষেত্রে কী যুক্তি দিব আমরা? যিনি বোরখা পরেছিলেন তার ক্ষেত্রে কী যুক্তি দিব আমরা? যুক্তি আছে? না।” বলেছিলেন, আমরা যেন নিজেরা শ্লীল হয়ে উঠি, ব্যক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাস করতে শিখি। “ব্যক্তি স্বাধীনতা”? এটি নিশ্চয়ই ইসলাম বিরোধী শব্দ। মুসলমানেরা সাধারণত ইউরোপ-আমেরিকায় গিয়ে তাদের নিজেদের নিয়ম জারি রাখতে এই শব্দটি ব্যবহার করে থাকেন। তাদের নিজেদের দেশে এধরণের শব্দ কেউ ব্যবহার করলে তার জীবন নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে যায়, যার উদাহরণ মোশারফ করিম। অত্যন্ত যৌক্তিক কথা বলেও তাকে ক্ষমা চাইতে হল। ক্ষমা চাওয়ার পোস্টটিতে তিনি লিখেছেন, “পোশাকের শালীনতায় আমি বিশ্বাস করি এবং তা জরুরী” এবার প্রশ্ন শালীনতার মাপকাঠি কী? কোনটি শালীন এবং কোনটি অশালীন এটা নির্ধারণ করবে কে? কারও কাছে মেয়েদের মাথার চুল দেখা গেলে সেটি অশালীন, কারও কাছে বোরখা ছাড়া বাকিসব অশালীন, কারও কাছে বোরখার পাশাপাশি নেকাব দিয়ে মুখ না ঢাকলে সেটি খুবই অশালীন। আবার কারও কারও কাছে মেয়েদের ঘর থেকে বের হওয়াই অশালীন। এটা অনেকটা সহি মুসলমান বিতর্কের মত। কেউ মনে করেন যারা নাস্তিক-বিধর্মীদের হত্যা করে তারাই সহি মুসলমান, আবার কেউ মনে করেন যারা মানুষ হত্যা করে তারা সহি মুসলমান নয়। এই সহি মুসলমানের যেমন কোনও সংজ্ঞা বা মাপকাঠি নেই, শালীন/ অশালীনেরও নেই। এটা সম্পূর্ণই নির্ভর করে ব্যক্তির উপর।
তাহলে মেয়েরা কী করবে? ঘরে বসে রান্নাবান্না আর বাচ্চা জন্ম দেয়ার যুগে ফিরে যাবে? নাকি পুরুষেরা নিজেদের চিন্তাধারাকে শালীন করবেন? এই প্রশ্ন তুলে মোশারফ করিমকে ক্ষমা চাইতে হলেও মেয়েদেরকে তেঁতুল মনে করা, মেয়েদেরকে স্বামী সেবা আর বাচ্চা জন্ম দেয়ার নির্দেশদাতা’কে কিন্তু তার ভয়ংকর আইনবিরোধী কথাগুলোর জন্য কোনও রকম ক্ষমা চাইতে হয় নি। বরং আমাদের নারী প্রধানমন্ত্রী তার সেবা যত্নে অর্থবিত্ত, স্বাদ আহ্লাদ, দাবিদাওয়া- সবকিছু একের পর এক পূর্ণ করে যাচ্ছেন। সংবিধান বিরোধী কথা বলেও শফি হুজুরকে ক্ষমা চাইতে হয় না। অথচ সাদামাটা দুটো যৌক্তিক কথা বলে মোশারফ করিমকে আতংকিত হয়ে ক্ষমা চাইতে হয়। স্বাধীন দেশে শফি হুজুরেরা সম্পূর্ণ স্বাধীন। তাই স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শফি হুজুর সহ সকল নারীবিরোধীদেরকে স্বাধীনতার প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানানোই যায়।
কাদের সিদ্দিকী, যাকে আমরা বঙ্গবীর বলে চিনি, ক’দিন আগে তিনি রঙ্গবীর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেন। বললেন, “এদেশে শুধু নারী আর নারী, আল্লাহ্র রহমত আসবে না।” নারী ক্ষমতায় থাকলে আল্লাহ্র রহমত আসবে না, দেশের উন্নতি হবে না- এসব কথা শফি হুজুরদের কাছ থেকে শুনলেও কাদের সিদ্দিকীর মত ব্যক্তির মুখ থেকে একই কথা শুনতে হবে কখনও ভাবিনি।
মোশারফ করিম সেদিন অনুষ্ঠানে আরও একটি জরুরী কথা বলেছিলেন। বলেছিলেন, “এটা আমাদের অসুস্থতা, সমাজের অসুস্থতা এবং সবচেয়ে ভয়ানক ব্যাপার হচ্ছে এরা যদি পার পেয়ে যেতে থাকে সেটাই বড় ব্যাধি। পার পেয়ে যেতে থাকলে ব্যাধি ছড়ায়, কমে না।” পার পেয়ে গেলে ব্যাধি ছড়ায়, কমে না- এটি জেনেও তিনি ক্ষমা চেয়ে তাদেরকে পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ দিলেন, যা অত্যন্ত হতাশার। তিনি না হয় আতংকিত হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন, আমাদের সমাজের ‘ভালো পুরুষেরা’ কোথায়? ফেসবুকে নারীবাদ বিষয়ক কিছু লিখলেই যারা ‘সব পুরুষ এক না’ স্লোগান ধরেন, তারা কেন এ ঘটনায় মোশারফ করিমের পাশে দাঁড়াচ্ছেন না? আপনারা তো দাবী করেন, দু’একটা খারাপ পুরুষের জন্য সব পুরুষের বদনাম হয়। কয়েকটা খারাপের ভয়ে একজনকে ক্ষমা চাইতে হল, এরপরেও কেন আপনারা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছেন না? কেন বলছেন না মোশারফ কোনও ভুল করেন নি? প্রতিবাদটা যতটা জোরালো হওয়া উচিত ততটা জোরালো কেন হচ্ছে না? কবে হবে? ব্যাধিকে প্রশ্রয় দিতে দিতে আর কত ছড়ানো হবে?
“নারী” বা “পুরুষ”
উত্তরমুছুনআসলে, তারা কি মানুষ???
না, তারা মানুষ নয়।
এখানে-ই, যত সব গন্ডগোল।
যদি, আমারা সবাই মানুষ হতাম।
তাহলে হয়তো,
ঐ সকল ব্যাধি মানুষকে স্পর্শ করতে পারত না।
অতীতের কিছু বন্ড বা দুষ্ট বা স্বর্থপর মানুষ, যেমন- নবী রাসুল, দেব-দেবী (মানুষ নয় এমন) উনাদের দিয়ে যাওয়া কিছু নিয়ম (ধর্ম) । যা পরবর্তী কালে মানুষকে ধর্মীক ( অমানুষ বা পশু) তে রুপান্তর করেছে।
অতীতের নিয়ম (ধর্ম) বর্তমানে দৈনন্দিন জীবনে মানুষকে বিপদের ফেলছে।
আমার মতে,
মানুষের ঘরে জন্ম নিলে বা মানুষের মতো চেহেরা হলে-ই তাকে মানুষ বলা যাই না।
আমাদের মনে রাখতে হবে, যে- মানুষের বিশেষ কিছিু বৈশিষ্ট্য আছে।
আসুন আমরা সবাই নিজেকে নারী বা পুরুষ হিসেবে দাবী না করে,
বরং নিজেকে মানুষ হিসেবে দাবী করি।
আপনার লেখার প্রশংসা করে, শেষ করে দিতে চায় না।
অনেক ভালো লেখছেন।
শুভ হোক আগামী
শুভ হোক আপনার পথ চলা...............
Emperor Casino – Play at an Online Casino
উত্তরমুছুনPlay at an Online Casino! Enjoy the febcasino best games from 제왕카지노 the choegocasino best games and the best bonuses available to Play at an Online Casino. The online gaming