“বিশ্বব্রহ্মান্ড সৃষ্টির আদিতে প্রানী বা
বস্তু কিছুই ছিল না। ‘অপ এব সসর্দাদৌ’- প্রথমেই জলের সৃষ্টি হলো। এই ব্রহ্মান্ডব্যাপী মহাসমুদ্রের উপর বিষ্ণু
মহানিদ্রায় শায়িত ছিলেন। তাঁর নাভিকমলে ছিলেন ব্রহ্মা। এদিকে বিষ্ণুর কানের ময়লা
থেকে মধু ও কৈটভ নামে দুই দৈত্যের জন্ম হলো। দৈত্যেরা ব্রহ্মাকে হত্যা করতে উদ্যত
হলে ব্রহ্মা মহাময়া ও বিষ্ণুর স্তব করতে লাগলেন। মহামায়া প্রসন্ন হলে বিষ্ণুর
মায়ানিদ্রা দূর হলো। তিনি মধু ও কৈটভকে বধ করলেন। ঐ দুই দৈত্যের মেদ থেকে মেদিনী
অর্থাৎ পৃথিবীর সৃষ্টি হলো। আকাশ, বাতাস, স্বর্গ, পাতাল সপ্তদ্বীপা বসুন্ধরা ক্রমে
সবই সৃষ্টি হলো। বিশ্ব ছিল সম্পূর্ণ তমসাচ্ছন্ন। চন্দ্র, সূর্য ও তারকারাজি সৃষ্টি
করে ঈশ্বর অন্ধকার দূর করলেন।
এদিকে কশ্যপ মুনির দুই পত্নী, দিতি ও অদিতি। দিতি থেকে
দৈত্যদের এবং অদিতি থেকে জন্ম হলো দেবতাদের। এখন মানুষ সৃষ্টি করা প্রয়োজন।
ব্রহ্মা সৃষ্টি বিস্তারের জন্য মানসপুত্র ঋষিদের সৃষ্টি
করলেন। কিন্তু ঋষিরা বংশবিস্তারে মনোযোগ না দিয়ে তপস্যায় মগ্ন হলেন। ব্রহ্মা প্রথম
নারী ও পুরুষের সৃষ্টি করলেন। প্রথম সৃষ্ট পুরুষের নাম স্বায়ম্ভুব মনু, নারীর নাম
শতরূপা। মানুষ মনুর সন্তান বলে মানব নামে পরিচিত”।
সুত্রঃ হিন্দু ধর্ম শিক্ষা, নবম দশম শ্রেনি, শিক্ষাবর্ষ
২০১২।
সবাই বুঝলেন তো কিভাবে পৃথিবী সৃষ্টি হল, কিভাবে মানুষ
সৃষ্টি হল?? ধর্মাকারীর শ্লোগান, ধর্মই সকল কৌতুকের উৎস। হোক কৌতুক, তাও ধর্ম তো,
নাকি? একে নিয়ে কি হাসাহাসি করা যায়? পাপ হবে না?
কেউ হাসবেন না। এতে অনুভূতি আঘাত প্রাপ্ত হতে পারে। আর
অনুভূতি আঘাত পেলে এর চিকিৎসা পবিত্র ধর্মগ্রন্থ সমূহতে উল্লেখ না থাকার কারনে ধার্মিকেরা
আপনাকে হত্যা করে আপনার রক্তকে ক্ষত স্থানে মলম হিসেবে ব্যবহার করবে।
একবিংশ শতাব্দীতে, মাথার উপর ফ্যান-লাইট নিয়ে, ল্যাপটপ-মোবাইল
ইউজ করতে করতে যখন পৃথিবী সৃষ্টির এমন কাহিনী ক্লাসে পড়ানো হয় তখন কি আর কিছু বলার
থাকে? ‘অমুক ধর্মে কৌতুক আছে, কিন্তু আমার ধর্মে নেই’। এই কথা বলে কেউ প্লিজ আপনার ধর্ম নিয়ে আমাকে হাসতে এবং
হাসাতে বাধ্য করবেন না, অনুভুতির প্রতি যত্নবান হোন। ‘আমার ধর্মই একমাত্র সত্য, বাকি সব মিথ্যা’ সব ধার্মিকদের মতেই তার নিজ নিজ ধর্ম
হল একমাত্র সত্য, এটা আমরা জানি।
যার যার ধর্ম সে পালন করুক, এতে নাস্তিকদের সমস্যা কোথায়?
-কোন শিশু জন্ম গ্রহণ কারার পর সে যেই পরিবারে জন্ম গ্রহন
করে, সেই পরিবারের ধর্ম লাভ করে। নাস্তিকদের মূল সমস্যা হল সেখানে। একটি শিশু
জন্মের পর থেকেই তার মগজ ধোলায় কার্যকক্রম শুরু। তাকে চিন্তা করার সুযোগ দেয়া হয়
না, জানার সুযোগ দেয়া হয় না। নিজের মত বলে যে কিছু আছে, সেটা বুঝার আগেই তাকে মেনে
নিতে হয় ধর্মীয় মত, বিশ্বাস করতে হয় ধর্মে। আর ছোটবেলা থেকেই যেই বিশ্বাস তার
মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়, সেই বিশ্বাসের ভূত মাথা থেকে তাড়ানো কোন সহজ কাজ নয়।
নাস্তিকেরা ব্লগে ফেইসবুকে লেখালেখি করছে, মানুষের মাথা থেকে সেই প্রাচীন
বিশ্বাসের ভূত তাড়ানোর মত কঠিন কাজটিই করে যাচ্ছে। বিশ্বাসীরা না বুঝে হত্যা করছে
এসব প্রগতির পক্ষের মানুষদের। কিন্তু আমরা থামছি না।
যেই কাজে নিজের স্বার্থ থাকে সেই কাজটি হয়তো মৃত্যুর ভয়
দেখিয়ে থামানো যায়। কিন্তু যেই কাজে নিজের কোন স্বার্থ নেই, অন্যের জন্য যেই কাজ,
সেই কাজে ভয় দেখিয়ে থামানো সম্ভব নয়। কারন নিজের কথা না ভেবে অন্যের জন্য যারা
ভাবছে তারা নিজের জীবনের পরোয়া না করেই এই কাজ করছে, তারা অন্যের জন্য নিজের
জীবনটি উৎসর্গ করছে। তারা মৃত্যুকে ভয় করে না।
কারো বিশ্বাসে আঘাত দেয়ার কি দরকার? নাস্তিকরা বেশি
বাড়াবাড়ি করে।
-বিশ্বাসে আঘাত না করে কি সভ্যতা আগানো সম্ভব? পুরানো
বিশ্বাসকে আকড়ে ধরে রাখলে সভ্যতা কি করে এগোবে? পৃথিবীতে এত এত ধর্ম। পুরাতন
ধর্মকে আঘাত করেই তো নতুন-নতুন ধর্মের সৃষ্টি হয়েছে। সেই নতুন আবার কালের বিবর্তনে
পুরাতন হয়েছে। কাজেই বিশ্বাসে আঘাত কোন নতুন বিষয় না। বিশ্বাসে আঘাত না করলে
সভ্যতা থমকে দাঁড়াবে। কিন্তু সভ্যতার চাকা কি থামিয়ে দেয়া সম্ভব? সভ্যতা এগিয়ে
চলবে। হয়তো এতে অনেক ত্যাগ লাগবে, অনেক রক্ত লাগবে। আমরা রক্ত দিতে প্রস্তুত।
আমাদের রক্তের স্রোতেই আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব সভ্যতাকে।
১৫/৫/২০১৫
অসাধারণ লাগলো লেখাটি পড়ে :)
উত্তরমুছুনঅসাধারণ লাগলো লেখাটি পড়ে :)
উত্তরমুছুনRe baba....soja bapar dhormo naa thakle dhormio babsa cholbe Ki kre?????....sobai ke to kore komme khete hobeto naki???
উত্তরমুছুন